আপনার কি মোবাইল চার্জ হতে অনেক সময় লাগে? মোবাইলে সমস্যা কি সেটা বুঝতে পারছেন না। তাহলে চিন্তার কোন বিষয় নেই। আজ আমরা এই বিষয়ের উপরেই আলোচনা করব। আপনাকে সে কারণগুলি বলে দেবো যার কারণে আপনার মোবাইল চার্জ হতে অনেক সময় লাগে।
মোবাইল চার্জ দেরিতে হওয়ার পেছনে শুধু একটি কারণ নয় একাধিক কারণ থাকতে পারে। এটি নির্ভর করে আপনার মোবাইলের ব্রান্ড, ব্যাটারি, চার্জার অথবা কানেকশনের উপর। যেমন আইফোন হচ্ছে একটি শক্তিশালী ও ব্যাকআপ ভালো দেওয়ার মতো ফোন।
অপরদিকে স্যামসাং হচ্ছে লাস্টিং এর জন্য ভালো ফোন। আর একদিকে অপো এবং ভিভোর মতো মোবাইল গুলো তাদের সেলফি ক্যামেরা ও ব্যাক ক্যামেরার জন্য বেশি প্রসিদ্ধ।
এক সময় ছিল যখন নকিয়া ব্র্যান্ডের মোবাইল কে বলা হতো সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী চার্জ সংরক্ষণ করার মোবাইল। তবে সময়ের সাথে সাথে সে ভ্রান্তি এবং হারিয়ে গেছে। আজ আমাদের সকলের হাতেই একটি করে স্মার্ট ফোন অথবা এন্ড্রয়েড ফোন থাকে।
যার ফোনের ব্যাটারি যত দ্রুত চার্জ হয় এবং যত বেশিখন সেই চার্জটি ধরে রাখতে পারে সে ব্যবহারকারী তত সন্তুষ্ট হন। এখন মোবাইল দেরিতে চার্জ হওয়ার পিছনে কি কি কারণ থাকতে পারে সেগুলো আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো এবং এর সমাধান বলে দেব।
মোবাইল চার্জ হতে অনেক সময় লাগে কেন?
আগেই বলেছি মোবাইল চার্জ হতে সময় লাগার পিছনে কোন একটি কারণ দায়ী নয়। এর পিছনে থাকতে পারে একাধিক কারণ। আমি সব কারণগুলো আপনার সামনে উপস্থাপন করব। সেখান থেকে আপনাকে বুঝতে হবে ঠিক কোন কারণের জন্য আপনার এই সমস্যাটি হচ্ছে।
এরপর নিচের দিকে এসে কারণটি প্রতিকার করার উপায় বলে দেওয়া থাকবে সেখান থেকে আপনি এই দেরিতে চার্জ হওয়ার সমস্যার প্রতিকার পেয়ে যাবেন। মোবাইল চার্জ হতে অনেক সময় লাগার পিছনে প্রধান কারণ গুলো হচ্ছে।
- চার্জিং কেবল সমস্যা
- চার্জিং অ্যাডাপ্টর সমস্যা
- ব্যাটারি সমস্যা
- মোবাইলের চার্জিং পোর্টে সমস্যা
চার্জিং কেবল সমস্যা
চার্জিং কেবল এমন একটি জিনিস জেটি ছাড়া কোন মোবাইলের চার্জার পোর্টে চার্জ দেওয়া সম্ভব নয়। আপনি নিজের মোবাইলের চার্জার থেকে যে চ্যাপ্টা পিনটি নিজের ফোনের চার্জিং পোর্টে প্রবেশ করান সেটিই হচ্ছে চার্জিং কেবল।
দীর্ঘদিন একটি চার্জিং ক্যাবল ব্যবহার করার ফলে এটি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাছাড়া এটি লুজ বা ঢিলা হতে শুরু করে। যার ফলে আপনি যখন মোবাইলটি চার্জে লাগিয়ে দেন এরপর সেই পোর্টে সমস্যা থাকার কারণে মোবাইল ঠিকমত চার্জ হয় না।
মোবাইলটি সেভাবেই থেকে যায়। নির্দিষ্ট সময় পর আপনি যখন আবার মোবাইলটি চেক দেন তখন আপনি দেখতে পারেন যে আপনার মোবাইলে তো চার্জই হয়নি। চার্জিং ক্যাবল সমস্যা আছে কিনা ভালো করে পর্যবেক্ষণ করুন।
চার্জিং অ্যাডাপ্টর সমস্যা
চার্জিং এডাপটার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যেটি মোবাইলে চার্জ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি আসলে একটি মোটা অংশ যেটি আপনি নিজের বাড়ির কারেন্টের প্লাগে ঢুকিয়ে দেন।
এই অ্যাডাপ্টারটি আপনার বাড়ির এসি কারেন্ট কে ডিসি কারনে রূপান্তর করে। সেই দিসি কারেন্ট চার্জিং ক্যাবল এর মাধ্যমে আপনার ফোনের ব্যাটারিতে প্রবেশ করে এবং ফোনের ব্যাটারি চার্জ হয়।
চার্জিং এডাপটার সমস্যা হলে যেমন চার্জ হতে সময় লাগবে তেমন ব্যাটারি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। কোম্পানির অরিজিনাল চার্জিং এডাপটার নষ্ট হয়ে গেলে আপনি যদি বাজার থেকে কোন নতুন চার্জিং এডাপ্টার কিনে থাকেন।
তাহলে সবার আগে সেটি পর্যবেক্ষণ করুন কারণ বাজার থেকে কেনা চার্জিং এডাপটার বেশিক্ষণ ভালো থাকে না। নির্দিষ্ট সময় পর এটি নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলস্বরূপ আপনার মোবাইল চার্জ হতে অনেক সময় লাগে এবং মোবাইলের ব্যাটারি নষ্ট হওয়া শুরু করে।
ব্যাটারি সমস্যা
যদি আপনার মোবাইলের মোটামুটি একটি বয়স হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, আপনি দীর্ঘদিন ধরে মোবাইলটি ব্যবহার করছেন। তাহলে হতে পারে আপনার মোবাইলের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মোবাইলের ব্যাটারি এমন একটি জিনিস যেটি এক না একদিন নষ্ট হবেই।
কেননা প্রতিনিয়ত মোবাইলের ব্যাটারি ক্ষয় হতে থাকে। নির্দিষ্ট সময় পর এই ক্ষয়ের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। যার লক্ষণ স্বরূপ মোবাইল চার্জ হতে অনেক সময় লাগে। আর চার্জ হয়ে যাওয়ার পর দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়।
তাই আপনার উক্ত সমস্যাটির জন্য হতে পারে আপনার মোবাইলের ব্যাটারি দায়ী। এর জন্য আপনাকে যেটি করতে হবে সেটি হচ্ছে ভালোভাবে আপনাকে নিজের মোবাইলের ব্যাটারি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে।
আপনার চার্জ যদি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। তাহলে ধরে নিবেন আপনার মোবাইলের ব্যাটারি আসলেই নষ্ট হয়েছে। সে ব্যাটারিটি পরিবর্তন করলে আপনি এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারবেন।
মোবাইলের চার্জিং পোর্টে সমস্যা
মোবাইলের চার্জিং পোর্ট হচ্ছে আপনি চার্জারের চ্যাপ্টা পোর্ট মোবাইলের যে স্থানে প্রবেশ করান সেটিই। দীর্ঘদিন যাবত মোবাইল ব্যবহার করার পর মোবাইলের চার্জিং পোর্ট অনেক ঢিলা হয়ে যায়।
যার কারণে চার্জারের পোর্ট শক্তভাবে ঢুকানোর পরেও এটি ভালোভাবে সংযোগ হয় না এবং চার্জ নেয় না। অনেক সময় আমরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য চার্জারের পোর্ট টেরা বেকা করে লাগিয়ে দেয়। কিন্তু এতে আরো ক্ষতি হয়ে যায়।
এর সবচেয়ে ভালো সমাধান হচ্ছে আপনি নিজের মোবাইল নিয়ে মোবাইল মেকার এর কাছে চলে যান। সর্বোচ্চ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে সে আপনার এই সমস্যার সমাধান করে দেবে।
মোবাইল দ্রুত চার্জ দেয়ার উপায়
আশা করছি উপরের আলোচনা থেকে আপনি কারণটি সনাক্ত করতে পেরেছেন। কোন কারণে আপনার মোবাইল চার্জ হতে বেশি সময় নিচ্ছে। কারণগুলো সনাক্ত করে এটির সমাধান করার চেষ্টা করুন। এখন আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো মোবাইলে দ্রুত চার্জ দেওয়ার কিছু উপায়।
এ উপায়গুলো ১০০% কার্যকরী। আপনি ভালোভাবে এগুলো জেনে নিন এবং এগুলো প্রয়োগ করুন। এগুলি টেকনিক্যালভাবে প্রমাণিত এবং অনেকেই এর উপর বিশ্বাস করে।
- মোবাইলের অরিজিনাল এডাপ্টার ব্যবহার করুন।
- অথবা, চার্জার থাকলে অরজিনাল চার্জার ব্যবহার করুন।
- মোবাইল চার্জে লাগানো অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার করবেন না।
- মোবাইল চার্জে লাগানোর পূর্বে মোবাইল সুইচ অফ করে দেওয়া উত্তম।
- মোবাইল সুইচ অফ করে দিয়ে মোবাইল চার্জে লাগালে চার্জ দ্রুত হয়।
- মোবাইলে চার্জ লাগানোর সময় ডাটা অফ রাখুন।
- চার্জিং এর সমস্যা হলে পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করুন।
- নিজের ব্যাটারির ভোল্টেজ অনুযায়ী চার্জার ব্যবহার করুন।
- মোবাইল চার্জে লাগানো অবস্থায় ব্যাকগ্রাউন্ডে কোন অ্যাপ চালাবেন না।
আরো পড়ুন | ল্যাপটপে কিভাবে অ্যাপস ডাউনলোড করব? |
এগুলো কিছু কিছু উপায় ছিল যেগুলো অবলম্বন করলে আপনার মোবাইল দ্রুত চার্জ হবে। আমরা মূলত মোবাইল চার্জ লাগানো অবস্থায় এই এটি ব্যবহার করি। যার কারণে একদিক থেকে আমাদের মোবাইলে চার্জ প্রবেশ করে অপরদিক থেকে আমরা সেটি খরচ করে ফেলি।
যার ফলে মোবাইলে চার্জ হতে বেশি সময় লাগে, সাথে মোবাইলের ব্যাটারি ক্ষয় হয়। এছাড়াও ব্যাকগ্রাউন্ডে কোন app থাকলে বা ডাটা অন থাকলে আপনার মোবাইলের চার্জ নষ্ট হতে থাকবে।
মোবাইলের চার্জ দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য ব্যাটারি সেভার অপশনটি অন করে রাখতে পারেন। এতে চার্জ কম খরচ হবে। তাছাড়া উপরের পয়েন্ট গুলো ভালো করে পড়ে অবলম্বন করুন আপনার মোবাইল দ্রুত চার্জ হবে।