অনলাইনে NESCO প্রিপেইড বিল চেক করার নিয়ম – ব্যালেন্স ও খরচ

NESCO এর পূর্ণরূপ হচ্ছে – Northern Electricity Supply Company (NESCO) Ltd. এর নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, নেস্কো বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সাপ্লাই করে থাকে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য নেস্কো কাজ করে থাকে।

আমরা যারা উত্তরাঞ্চলে বসবাস করি অর্থাৎ রাজশাহী, রংপুর, নীলফামারী এবং দিনাজপুর ইত্যাদি জেলায়। আমাদের এইসব জেলায় নেস্কো বিদ্যুৎ প্রবাহ করে থাকে। আজকে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি অনলাইনে NESCO প্রিপেইড বিল চেক করার নিয়ম সম্পর্কে।

Read More : প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করার নিয়ম – ২টি পদ্ধতি জেনে নিন

অনলাইনে NESCO প্রিপেইড বিল চেক করা অনেক সহজ। তবে আমরা অনেকে কখনোই এই কাজটি না করার কারণে আমাদের কাছে এটি অনেকটাই অপরিচিত একটি বিষয়।

তবে চিন্তার কোন বিষয় নেই আজকের আলোচনা মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি সব শিখে যাবেন। এখন মূল আলোচনার দিকে এগিয়ে যাওয়া যাক।

NESCO প্রিপেইড বিল চেক করার নিয়ম

আপনি নিজের স্মার্টফোনের মাধ্যমেই বিল চেক করতে পারবেন। শুধু নিচের ধাপগুলো মনোযোগ সহকারে অনুসরণ করুন।

  1. এই লিংকে NESCO ক্লিক করুন
  2. আপনার সামনে একটি লগইন ইন্টাফেস চলে আসবে।
  3. সেখানে নিজের ১১ ডিজিটের কনজ্যুমার নাম্বার লিখুন।
  4. ক্যাপচা ভেরিফাই হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
  5. এরপর ‘লগইন‘ বাটনে ক্লিক করুন।
  6. এরপর ‘রিচার্জ হিস্ট্রি দেখুন‘ অপশনে চাপ দিন।
  7. একটু স্ক্রল করে নিচের দিকে আসুন।
  8. অবশিষ্ট ব্যালেন্স (টাকা) লেখা থাকবে। সেখানেই আপনার অবশিষ্ট বিল বা ব্যালেন্স দেখতে পাবেন।
  9. বিস্তারিতভাবে বুঝতে নিচের ছবিগুলো অনুসরণ করুন।
NESCO প্রিপেইড বিল চেক করার নিয়ম

NESCO প্রিপেইড বিল চেক করার নিয়ম

NESCO প্রিপেইড বিল চেক করার নিয়ম

Read More : কম্পিউটার বা ল্যাপটপ স্লো হলে করণীয়

প্রিপেইড মিটার রিচার্জ হচ্ছে না? করণীয় জেনে নিন

সকল প্রিপেইড মিটার হেল্প লাইন নাম্বার – NESCO, DESCO, BPDB

NESCO প্রিপেইড মিটারের ব্যালেন্স দেখার কোড

NESCO প্রিপেইড মিটারের ব্যালেন্স দেখার কোডসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও দরকারি কোড আপনাদের উপকারের জন্য উপস্থাপন করছি।

ব্যালেন্স দেখার কোড801
মাসিক খরচ দেখার কোড814
সর্বশেষ রিচার্জের তারিখ দেখার কোড815
সর্বশেষ রিচার্জের পরিমান দেখার কোড816

উক্ত জিনিসগুলো দেখার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন –

  • NESCO প্রিপেইড মিটারের ঢাকনা খুলুন।
  • সামনে 0-9 পর্যন্ত বোতাম দেখতে পাবেন। যেটিকে কিপেড বলে।
  • আপনার কোডটি সেখানে চাপুন।
  • এরপর নিচে নীল রঙের ‘ইন্টার’ বোতামে চাপুন।
  • উপরে স্ক্রিনে আপনার তথ্য দেখতে পারবেন।

NESCO প্রিপেইড মিটারের মাসিক খরচ দেখার নিয়ম

অনলাইনে NESCO প্রিপেইড মিটারের মাসিক খরচ দেখা অনেক সহজ। উপরে বিল চেক করার যে নিয়মটি জানিয়েছি সেটি অনুসরণ করে আগে লগইন করুন। লগইন হয়ে গেলে নিচের ধাপগুলো ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করুন।

  • লগইন করে ‘মাসিক ব্যবহার দেখুন‘ অপশন পেয়ে যাবেন।
  • তার উপর ক্লিক করুন।
  • নিচের দিকে একটি চার্ট ওপেন হবে। স্ক্রল করে নিচে চলে যান।
  • সেখানে মাসের নাম দেখতে পাবেন।
  • একই সারিতে মাসিক “সর্বমোট ব্যবহার” দেখতে পাবেন।
  • সেখানে লিখিত মোট টাকায় আপনার ঐ মাসের ভ্যাট ও কর্তনসহ খরচ হওয়া টাকার হিসাব।
NESCO প্রিপেইড মিটারের মাসিক খরচ দেখার নিয়ম

NESCO প্রিপেইড মিটারের মাসিক খরচ দেখার নিয়ম

আপনি সেখানেই মোট মাসিক রিচার্জের পরিমান, মাসিক ব্যবহৃত বিদ্যুৎ ও টাকার হিসাব, ডিমান্ড চার্জ ও ভাটের পরিমান দেখতে পারবেন। আপনি যদি অনলাইনে চেক না করতে পারেন তবুও নিজের প্রিপেইড মিটারে ৮১৪ টাইপ করে সরাসরি মাসিক ব্যবহার দেখতে পারবেন।

নেস্কো প্রিপেইড মিটারের কিছু সংকেত এবং সুবিধা ও অসুবিধা

প্রথমে কথা বলবো নেস্কো প্রিপেইড মিটারের কিছু সংকেত নিয়ে। আপনারা বুঝবেন কিভাবে যে আপনার মিটারের ব্যালেন্স কম বা আপনাকে এখন রিচার্জ করা জরুরি। মিটারে সর্বক্ষণ ২ টি বাতি জ্বলতে থাকে। একটি হচ্ছে সবুজ বাতি।

যেটি নির্দেশ করে যে আপনার মিটারে এখন যথেষ্ট পরিমান টাকা আছে। অর্থাৎ আপনাকে এখন মিটার রিচার্জ করার কোনো প্রয়োজন নেই। আর যখন আপনার সেই সবুজ বাতিটিও লাল হয়ে জ্বলবে তখন বুঝতে হবে আপনার মিটারে ব্যালেন্স অনেক কম।

যেকোনো সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। তাই তাড়াতাড়ি মিটারে টাকা রিচার্জ করতে হবে। এটি ছিল চোখে দেখেই মিটারের ব্যালেন্স পর্যালোচনা করার নিয়ম।

Read More : মোবাইল দ্রুত চার্জ দেয়ার উপায়

এখন জানিয়ে দেব নেস্কো প্রিপেইড মিটারে কোড ডায়াল না করেই কিভাবে ব্যালেন্স চেক করবেন। এটি অনেক সহজ একটি পদ্ধতি। আমরা অনেকেই যেটি জানিনা। সকলে কোড চেপে ব্যালেন্স দেখা নিয়ে ব্যাস্ত।

মিটারের ডান পাশে একটি বড় বর্গাকার সবুজ রঙের বোতাম রয়েছে। বোতামটি চাপলে মিটারে অবশিষ্ট ব্যালেন্স বা টাকার পরিমান দেখা যায়। তাই আপনি সহজেই সবুজ বোতামটি চেপে ব্যালেন্স দেখতে পারবেন। এতে কোড ডায়াল করার কোনো ঝামেলা থাকবে না।

এখন এই মিটারটির কিছু সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক –

Pros

  • বিদ্যুৎ বিল দেয়ার কোনো ঝামেলা নেই
  • ঘরে বসেই মিটার রিচার্জ করা যায়
  • অগ্রিম টাকা রিচার্জ করতে হয় বলে বকেয়া বিল জমার কোনো ভয় নেই
  • সময়মতো বিদ্যুৎ ব্যবহার হিসাব করা যায়।
  • বিদ্যুৎ ব্যবহার বেশি হলে, খরচ হিসেব করে ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায়
  • রাত ১১ টার পর ব্যালেন্স শেষ হলে সকাল ১১ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয় না। এটি ফ্রেইন্ডলি হাওয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়।

Cons

  • ভ্যাট, মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জ কর্তনের কারণে মাসিক খরচ অনেক বেড়ে যায়
  • মিটারে ব্যালেন্স শেষ হলে সাথে সাথে রিচার্জ করতে হয়। নাহলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। [ফ্রেইন্ডলি হাওয়ার বাদে}
  • গরিব ও দরিদ্রদের মত অনুযায়ী এই মিটার সিস্টেম অনেক কষ্টদায়ক

FAQ

নেস্কো কি সরকারি প্রতিষ্ঠান?

জি হ্যা, নেস্কো সরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ, রক্ষনাবেক্ষন, বিদ্যুৎ সংযোগ ও বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য কাজ করে। উত্তরাঞ্চলের সকল জেলাতে বিদ্যুৎ নেস্কোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নেস্কোর পূর্ণরূপ হচ্ছে – “নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড”।

নেসকো লিমিটেড কি কাজ করে?

নেসকো বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ, রক্ষনাবেক্ষন, বিদ্যুৎ সংযোগ ও বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য কাজ করে। নেসকোর নামের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এখানে “নর্দান” শব্দ রয়েছে। যার অর্থ উত্তরদিকে। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেস্কো) বাংলাদেশের উত্তরদিকের সকল জেলাতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া এ সকল জেলাতে নেস্কোর প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করা হয়।

নেসকো কোথায় অবস্থিত?

নেসকোর সদরদপ্তর রাজশাহীর হেতেমখায় অবস্থিত। নেস্কো বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কাজ করে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই নেসকোর দপ্তর রয়েছে। গ্রাহকেরা যেকোনো সমস্যার সমাধান পেতে সেসকল দপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন।

উপসংহার

আজকের পোস্ট NESCO প্রিপেইড বিল চেক করার নিয়ম আলোচনা করা হয়েছে। একজন সাধারণ মানুষ কিভাবে তার প্রিপেইড মিটারের বিল চেক করবে সেটি ছবি ও কথা উভয় মাধ্যমে সূক্ষ্ণভাবে বুঝানো হয়েছে। সাথে মাসিক খরচ, মাসিক রিচার্জ ও ব্যবহৃত বিদ্যুৎ এর পরিমান বের করার নিয়ম জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সর্বোপরি আশা করছি আপনার জন্য পোস্টটি উপকারী প্রমান হবে এবং আপনার সহায়ক হবে। কোনো কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে নিচে কমেন্ট করে জিজ্ঞেস করুন। আমি উত্তর দেওয়ার সম্পূর্ণ চেষ্টা করবো।

Leave a Comment